মানুষের অনেকরকম অভ্যাসই থাকে যা তার অজান্তেই ঘটে। এর মধ্যে আঙুল ফো’টানো অন্যতম। টানা অনেকক্ষণ কাজ করলে বা গভীরভাবে কিছু চিন্তা করার সময়ে অনেকেই আঙুল মটকান। তার চেয়ে বেশি করে অনেকে আঙুল মটকান একঘেয়েমি কা'টাতে। কিন্তু অনেকেই বলেন, আঙুল মটকালে বাতের ব্যথার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কথাটি কি ঠিক? কী বলছে বিজ্ঞান? এর জন্য প্রথমেই জানা উচিত বাতের ব্যথা কেন হয়? চিকিৎসকরা বলছেন, জয়েন্টের মধ্যে থাকা তরুণাস্থি ভেঙে গেলে হাড়গু'লো পরস্পরের স''ঙ্গে ঘষা লাগে। আর তাতেই ব্যথা হয়। একেই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বাত বা আর্থ্রাইটিস বলা হয়।
আমা'দের জয়েন্টগু'লো একটি সাইনোভিয়াল ঝিল্লি দ্বারা বেষ্টিত থাকে। এতে থাকে সাইনোভিয়াল তরল। এই তরল দু’টি হাড়ের মধ্যে লুব্রিকেট হিসেবে কাজ করে এবং একটির স''ঙ্গে অন্যটির ঘর্ষণ প্রতি'হত করে। এবার দেখা যাক, আঙুল মটকালে কী হয়? সেক্ষেত্রে কি সত্যিই বাতের ব্যথার মতো কোনো সমস্যা 'হতে পারে? কী বলছে চিকিৎসা বিজ্ঞান? কেউ যখন আঙুল ফাটান বা আঙুল মটকান, তখন তিনি জয়েন্টগু'লো টেনে আলাদা করছেন। আর এই টানের ফলে যে ফাঁ'কা জায়গা তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে বাতাসের বাবল তৈরি হয়। এই বাবলগু'লোই ফেটে যায়, আর তার ফলেই ওই আওয়াজটি বেরোয়।
দুটি সমীক্ষা চালানো হয়েছে এই আঙুল মটকানোর বি'ষয়টি নিয়ে। একটির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ১৯৯০ সালে। অন্যটি প্রকাশিত হয়েছে ২০১১ সালে। সেখানেই বাতের ব্যথার স''ঙ্গে আঙুল মটকানোর যোগ আছে কি না, তা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম গবেষণাটি ছিল আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের। ১৯৯০ সালে তারা যে গবেষণাপত্র প্রকাশ করে, সেখানে বলা হয়েছিল, এই দুইয়ের মধ্যে কোনো যোগ তারা পায়নি। পরের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন গবেষক বাতের ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস নিয়ে কাজ করতে যান। তাঁরাও বলেন, এই বাতের স''ঙ্গে আঙুল মটকানোর কোনও যোগাযোগ নেই। এই গবেষণাপত্রটি ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়।
সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হল আঙুল মটকানো কি পুরোপুরি নিরাপদ? মোটেই তা নয়। বাতের সমস্যানা হলেও অন্য সমস্যা 'হতে পারে। ক্রমাগত আঙুল মটকালে আপনার সাইনোভিয়াল মেমব্রেন ছিঁড়ে যেতে পারে এবং জয়েন্টগু'লিকে ফাটতে শুরু করতে পারে। এছাড়াও যারা খুব ঘন ঘন আঙুল মটকান, তাদের আঙুল দুর্বল হয়ে যেতে পারে। কবজির হাড়ও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তাতে কমে যেতে হাতের জোরও। ফলে আঙুল মটকানোর অভ্যাস বদলানোই ভালো।